ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

কীটনাশক ছাড়াই গোবর ও গোমূত্র দিয়ে আমন চাষ

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২২ ২১:৪৭

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২২ ২১:৪৭

ছবি : সংগৃহীত

নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) থেকে : ‘জিরো বাজেট ন্যাচারাল ফার্মিং পদ্ধতি’ অনুসরণ করে নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের ছাতনীপাড়ার বাবলু লাকড়া ও উজ্জ্বল তিরকী এবার বিআর ৭১ জাতের ধান চাষ করেছেন। এতে কোনো রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই গোবর ও গোমূত্র দিয়ে বিশেষভাবে চাষ করেছেন তাঁরা। প্রাকৃতিক উপায়ে ধান চাষ করে সাড়া ফেলেছেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার দুই কৃষক।

তাঁরা কোনো রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেননি আমন আবাদে। ১০০ দিনের মাথায় তাঁদের খেত শিষে ছেয়ে গেছে। তাঁরা ভালো ফলনের আশা করছেন। তাঁদের চাষের প্রক্রিয়ায় খরচ কম হওয়ায় অন্য কৃষকেরা আগ্রহী হচ্ছেন।

বেসরকারি সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশের (সিসিডিবি) দিকনির্দেশনা ও আর্থিক সহযোগিতায় বাবলু ও উজ্জ্বল এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করেছেন।

রবিবার (৯ অক্টোবর) উজ্জ্বলের মিয়ার জমিতে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের মধ্যে শুধু তাঁদের জমিতে ধানের শিষে ভরে গেছে। উজ্জ্বল হোসেন জানান, এবার আমন মৌসুমে ৬ বিঘা ধান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ২০ শতক জমিতে সিসিডিবির সহযোগিতায় জিরো বাজেট ন্যাচারাল ফার্মিং পদ্ধতিতে বি,আর ৭১ জাতের ধান চাষ করেছেন তাঁরা। এখন ধানগাছের বয়স ৩ মাস ১৫ দিন। ১০ দিনের মধ্যেই ধান কাটতে পারবেন তিনি।

অপর কৃষক বাবলু জানান, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে তাঁর বিঘাপ্রতি দুই হাজার টাকার বেশি সাশ্রয় হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিতে আরও বেশি পরিমাণে চাষাবাদ করবেন তিনি।

হরিরামপুর গ্রামের কৃষক রমেশ তিগ্গা বলেন, ‘শুনেছিলাম সার ও কীটনাশক ছাড়াই বাবলু ও উজ্জ্বল ধান চাষ করেছেন। অনেকে বলেছেন ফলন হবে না। শুধু কষ্ট বিফলে যাবে। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ধানের শিষ আসায় এলাকার কৃষকেরা হতবাক। আমরাও এই পদ্ধতি অনুসরণে চাষ করব।’

চাষ পদ্ধতি জিরো বাজেট ন্যাচারাল ফার্মিং পদ্ধতিতে প্রথমে ‘জীবামুরদ’ তৈরি করতে হয়। এতে ১০ কেজি গোবর, ১০ লিটার গোমূত্র, ১ কেজি চিটাগুড়, ১ কেজি বেসন ও পরিমাণমতো মাটি দিয়ে মেশাতে হয়। তিন দিন রাখার পর তা জীবামুরদে পরিণত হয়। পরে তা জমিতে দিয়ে ধানের চারা রোপণ করতে হয়। এ পদ্ধতিতে ১১৪ দিনের মাথায় ধান ঘরে তোলা যায়।

সিসিডিবির দাউদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক হরি সাধন রায় বলেন, ‘আমরা দেখেছি কৃষকদের একটা বড় অঙ্ক রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের পেছনে ব্যয় করতে হয়। তাতে কৃষকের লাভের অর্ধেক চলে যায়। এই অঞ্চলে প্রথমবার দুই কৃষক ৩৮ শতক জমিতে জিরো বাজেট ন্যাচারাল ফার্মিং পদ্ধতিতে ধান চাষ করেছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: