ঢাকা | সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

নবীনগের রাজহাঁস পালনে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন জুরু মিয়ার

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০২২ ২৩:০৩

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০২২ ২৩:০৩

ছবি : সংগৃহীত

নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা : গৃহপালিত অন্যান্য পাখির মত রাজহাঁস এক ধরনের পাখি। অনেকেই সাধারণ হাঁস/মুরগীর খামার গড়ে তুলেছন, কিন্তু রাজহাঁসের খামারের কথা কখনো ভাবেননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের মধ্যপাড়ার জুরু মিয়া এই প্রথম রাজাহাঁসের খামার করার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি স্থানীয় বাজার থেকে ৪টি রাজাহাঁস ক্রয় করে পালন শুরু করেন। এক বছরে তার রাজাহাঁসের সংখ্যা দাডিছে ৩০টি।

জুরু মিয়া বলেন, ‘আগামী দুই বছরে শতাধি রাজাহাঁস আমার খামারে হবে, আমি বড় খামারি হব এ আমার ইচ্ছা।’

তার রাজহাঁস শুধু শোভাবর্ধন করে না, বাড়ি-ঘর পাহারা দেয়, চোর তাড়ায়, ঘাস কাটার মেশিনের মত কাজ করে ঘাস সমান করে খেয়ে ফেলে। পোকা- মাকড় খেয়ে জায়গা-জমি পরিষ্কার রাখে।

রাজহাঁসের মাংস সু-স্বাদু খাবার, এর পলক দিয়ে লেপ-তোষক-বালিশ তৈরি করা হয়। এরা ডিম পাড়ে খুব কম, এই কারণে রাজহাঁস পালনকারী ডিম না খেয়ে সেটা থেকে বাচ্চা সৃষ্টি করতেই বেশি উৎসাহী হয়ে থাকেন। রাজহাঁসের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে, তার মধ্যে টুলুজ, এমডেন, আফ্রিকান, চিনা (চিন দেশের) প্রজাতি গুলো সাধারণত দেখা যায়। টুলুজ এবং এমডেন ছাড়া অন্যরা আকারে ছোট। এরা সংখ্যায় বেশি ডিম দেয়, বছরে ৬০ টির বেশী। পাহারাদার হিসেবে চিনা রাজহাঁসের সুখ্যাতি আছে।

জুরু মিয়া বলেন, রাজহাঁসের ঘর খোলা-মেলা ও বায়ু চলাচল যুক্ত হতে হবে, মেঝে হতে হবে- পাকা/ শক্ত অথচ কাঁচা, সব সময় শুকনো থাকতে হবে, হাঁস পিছু ৪ বর্গ মিটার হতে হবে।

সাধারণত এরা বসন্ত কালে ডিম দিতে শুরু করে, চিনা রাজহাঁস ডিম দেয় শীতকালে। প্রথম বছরের তুলনায় এরা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে বেশি ডিম দিয়ে থাকে এবং ডিম আকারে ও বেশ বড় হয়ে থাকে। রাজহাঁস নিজের ডিম ফুটিয়ে থাকে, সুবিধা থাকলে আপনি টার্কি মুরগি বা মস্কোডি হাঁস, মুরগি দিয়েও রাজহাঁসের ডিম ফুটিয়ে নিতে পারেন। ২৮ দিনে রাজহাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।

বাচ্চারা সহজে ঘাসে চড়ে খেতে পারে, ফলে তৈরি খাবার কম লাগে। রাজহাঁসের বাচ্চাদের খাবার মোটামুটি হাঁসের খাবারের মত। রাজহাঁসের তেমন রোগ-ব্যাধি হয় না, তবে রাজহাঁস পালনে যে সমস্ত রোগ সম্বন্ধে সচেতন হওয়া উচিত- ককসিডিওসিস, কলেরা, কোরাইজ, স্পাইরোকিটোসিস, অপুষ্টিজনিত রোগ। এরা অপরিচিতি শব্দ, লোকজন, জন্তু-জানোয়ার দেখা মাত্র প্যাঁক- প্যাঁক শব্দ করে আশ পাশের সকলকে তটস্থ করে তোলে। এমনকি প্রবল উত্তেজনায় অনেক সময় আক্রমন পর্যন্ত করে বসে। সব রাজহাঁসের মধ্যে পাহারাদারি কাজে চীনা রাজহাঁস দক্ষতম। আমাদের দেশে রাজহাঁসের মাংস ও ডিম উপাদেয় খাবার হিসাবে গুরুত্ব পেয়ে থাকে। ১০ সপ্তাহ বয়সে রাজহাঁস মাংস হিসেবে খাওয়া চলে। রাজহাঁসের পালক, নাড়ি ভুঁড়ি বাদ দিলে তার দেহের ওজনের শতকরা ৭০ ভাগ মাংস পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শামীম আহমেদ বলেন, পৌর এলাকাসহ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নেই রাজহাঁস পালন করা হয়। আমরা ভ্যাকসিনসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি। রাজহাঁস পালন লাভজনক, কেউ রাজহাঁসের খামার করলে আমরা তাঁকে ভ্যাকসিনসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করব।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: