ঢাকা | সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

শিবপুরের লটকন চাষিদের মুখে হাসি

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২২ ২৩:৪১

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২২ ২৩:৪১

ছবি: সংগৃহীত

শিবপুর (নরসিংদী) থেকে : নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় গাছে গাছে এখন লটকনের সমারোহ। বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে থোকা থোকা পাকা লটকন। ইতিমধ্যে চাষিরা লটকন বিক্রিও শুরু করেছেন। দাম ভালো পেয়ে চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। এবার লটকনের ফলন কম হওয়ায় দাম বেশ চড়া। প্রতি কেজি লটকন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা দরে। তাই ফলন কম হলেও এবার চাষিরা লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন।

লটকন চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় এ উপজেলায় চাষিদের মধ্যে লটকন চাষাবাদে উৎসাহ বাড়ছে। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। লটকন চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেক কৃষক। তবে এবার আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় গত বছরের তুলনায় ফলন কম হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। এখানকার শত শত মণ লটকন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সরবরাহ হচ্ছে। রফতানি হচ্ছে বিদেশেও।

উপজেলা কৃষি অফিস-সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের তিনটি ইউনিয়নে লটকন চাষ করা হয়েছে। জয়নগর, বাঘাব ও যোশর ইউনিয়নসহ আরো কয়েকটি গ্রামে প্রায় ১৪৫০ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় মিলে প্রায় তিন হাজার লটকন বাগান রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে যোশর ইউনিয়নের চৈতন্যা, জয়নগর ইউনিয়নের কামরাব, সুজাতপুর, আজকিতলা গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১০-১৫ বছর আগেও লটকনের তেমন চাহিদা ছিল না। দামও ছিল কম। সেজন্য কেউ লটকনের আলাদা বাগান করার চিন্তা করত না। বর্তমানে টক-মিষ্টি সুস্বাধু এ ফলের চাহিদা ও মূল্য দুটিই বেড়েছে। এমনকি অন্যান্য ফল চাষের তুলনায় লটকনের ফলন বেশি হয় বলে চাষিরাও লাভবান হচ্ছে।

গুণগত মান ভেদে লটকন মণপ্রতি তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হয়ে থাকে। পাইকাররা নিজেরাই বাগান থেকে লটকন ক্রয় করে থাকেন।

এ উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় উঁচু লালচে অম্লীয় মাটি এবং ছায়ামুক্ত আবহাওয়া থাকায় লটকনের ফলন ভাল হয়ে থাকে। ফলে লটকন চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরই চাষির সংখ্যা বাড়ছে।

উপজেলার যোশর ইউনিয়নের চৈতন্যা গ্রামের লটকন চাষি ইমাম উদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমার ৩০০ শতাংশ জমিতে লটকন বাগান রয়েছে। গত বছর ভালো ফলন হয়েছিল যার ফলে ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলাম। এবার ফলন কিছুটা কম হয়েছে। এখনো লটকন বিক্রি শুরু করিনি। যেহেতু ফলন কম, আশা করি দাম বেশি পাব।’

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন সাদেক বলেন, ‘এখানকার লটকন দেশের বাইরেও রফতানি হয়ে থাকে। গত বছর দুই থেকে তিন টন লটকন দেশের বাইরে রফতানি হয়েছে। এবার আরো বেশি চাহিদা রয়েছে।’

শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: ফারহানা আহম্মেদ বলেন, ‘লটকন একটি সুস্বাধু পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন-সি-সমৃদ্ধ ফল। লটকন শরীরের ত্বক, দাগ, মাড়ি ও হাড় সুস্থ রাখে। এ ফলে ক্যালরি ও ফ্যাট কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেশ উপকারী।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: