ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

এবার শ্রীলঙ্কাকে হারাল আফগানিস্তান

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৩

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৩

ছবি: সংগৃহীত

খেলাধুলা ডেস্ক: ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান বধের পর এবার আরেক বিশ্বকাপজয়ী দল শ্রীলঙ্কাকে হারাল আফগানিস্তান। ব্যাটিং-বোলিং নৈপুন্যে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। এই প্রথম বিশ্বকাপের মঞ্চে শ্রীলঙ্কাকে হারালো আফগানরা। এই জয়ে ৬ খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চমস্থানে উঠলো আফগানিস্তান। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠস্থানে নেমে গেল শ্রীলঙ্কা।

আফগান পেসার ফজলহক ফারুকি ও স্পিনার মুজিব উর রহমানের বোলিং নৈপুন্যে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯ দশমিক ৩ ওভারে শ্রীলংকাকে ২৪১ রানে অলআউট করে আফগানিস্তান। ফারুকি ৪টি ও মুজিব ২টি উইকেট নেন। জবাবে তিন ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে ২৮ বল বাকী থাকতে জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। রহমত শাহ ৬২, হাসমতুল্লাহ শাহিদি ৫৮ ও আজমতুল্লাহ ওমারজাই ৭৩ রান করেন।

পুনেতে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় আফগানিস্তান। ব্যাট হাতে দলকে ভালো সূচনা এনে দিতে পারেনি শ্রীলঙ্কার ওপেনাররা। ষষ্ঠ ওভারে আফগানিস্তান পেসার ফজলহক ফারুকির বলে লেগ বিফোর আউট হবার আগে ১৫ রান করেন দিমুথ করুনারত্নে।

দলীয় ২২ রনে করুনারত্নে ফেরার পর দ্বিতীয় উইকেটে হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়েন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। টানা পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৪৬ রানে থামেন ৫টি বাউন্ডারি মারা নিশাঙ্কা। মেন্ডিসের সাথে ৭৭ বলে ৬২ রান যোগ করে পেসার আজমতুল্লাহ ওমরাজাইর শিকার হন নিশাঙ্কা।

নিশাঙ্কার পর সাদিরা সামারাবিক্রমার সাথেও হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়েন মেন্ডিস। ৫৭ বলে গড়ে ওঠা ৫০ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন করেন স্পিনার মুজিব উর রহমান। ৩টি চারে ৩৯ রানে বিদায় নেন মেন্ডিস।

মেন্ডিসকে শিকারের পর ৩টি চারে ৩৬ রানকরা সামারাবিক্রমাও শিকার হন মুজিবের।

৫ রানের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ১৪ রানে স্পিনার রশিদ খান এবং চারিথ আসালঙ্কাকে ২২ রানে শিকার করেন ফারুকি। ১ রানে আউট হন দুসমন্থা চামিরা। ১৮৫ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে ২শর নীচে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেটি হতে দেননি ম্যাথুজ-মহেশ থিকশানা। অষ্টম উইকেটে ৪২ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তারা।

৪৭তম ওভারে থিকশানাকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন ফারুকি। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ বলে ২৯ রান করেন থিকশানা।

থিকশানার সাথে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়া ম্যাথুজকে ৪৯তম ওভারে থামান ফারুকি। দলীয় ২৩৯ রানে মোহাম্মদ নবির দারুন ক্যাচে আউট হবার আগে ১টি করে চার-ছক্কায় ২৬ বলে ২৩ রান করেন অভিজ্ঞ ম্যাথুজ।

শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৩ বল বাকী থাকতে ২৪১ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপের মঞ্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ রান লঙ্কানদের।

আফগানিস্তানের পক্ষে ফারুকি ১০ ওভারে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন। ১০ ওভারে ৩৮ রানে ২ উইকেট শিকার করেন মুজিব। ১টি করে উইকেট নেন ওমরজাই ও রশিদ।

২৪২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে উইকেট হারায় আফগানিস্তান। বাঁ-হাতি পেসার দিলশান মাদুশঙ্কার ইনসুইঙ্গারে বোল্ড হয়ে খালি হাতে ফিরেন ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ।

শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে আফগানিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ। ৯৭ বলে ৭৩ রানে জুটি গড়েন তারা। মাদুশঙ্কার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৩৯ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন জাদরান।

জাদরান ফেরার পর রহমতকে নিয়ে দলকে লড়াইয়ে রাখেন আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদি। ইনিংসের ২৫তম ওভারে ওয়ানডেতে ২৫তম ও টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৬১ বল খেলা রহমত।

২৮তম ওভারে পেসার কাসুন রাজিথার পঞ্চম বলে সামারাবিক্রমার হাতে জীবন পান রহমত। কিন্তু পরের ডেলিভারিতেই বিদায় নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৭টি চারে ৭৪ বলে ৬২ রান করেন রহমত। শাহিদি-রহমত জুটিতে যোগ করেন ৫৮ রান। দলীয় ১৩১ রানে রহমত ফেরার পর ওমরজাইকে নিয়ে আফগানিস্তানের জয়ের পথ তৈরি করেন শাহিদি। ৪০তম ওভারে দলের রান ২শ’ পূর্ণ করেন তারা।

জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস ও সেঞ্চুরি জুটির সুবাদে ৪৫.২ ওভারে আফগানিস্তানকে জয়ের বন্দরে নেন শাহিদি ও ওমরজাই। ৬৭ বলে ওয়ানডেতে ১৮তম ও বিশ্বকাপে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন শাহিদি। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪টি হাফ-সেঞ্চুরির মালিক এখন শাহিদি। ৭৪ বল খেলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন শাহিদি।

অপরদিকে ৫০ বলে ওয়ানডেতে তৃতীয় ও বিশ্বকাপে দ্বিতীয় অর্ধশতক করেন ওমরজাই। হাফ-সেঞ্চুরির পর মারমুখী ব্যাট চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৩ বলে ৭৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন ওমরজাই। চতুর্থ উইকেটে ১০৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ১১১ রান করেন শাহিদি-ওমরজাই।

শ্রীলংকার মাদুশঙ্কা ৪৮ রানে ২ উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা হন আফগানিস্তানের ফারুকি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: