ঢাকা | শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

আফগান সঙ্কট এবং পশ্চিমা বিশ্ব

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২২ ০৪:৩২

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২২ ০৪:৩২

ছবি : রায়হান আহমেদ তপাদার

রায়হান আহমেদ তপাদার : গত ১৫ আগস্ট তালেবানের কাছে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হয়। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। তারা ইতিমধ্যে দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে। আফগানিস্তান তালেবানের দখলে যাওয়ার আগে থেকেই দেশটির ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, খরা, নগদ অর্থের স্বল্পতা ও খাদ্যের অভাবের কারণে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের পতনের আগে দেশটি কয়েক শ’ কোটি ডলার বিদেশি সহায়তা পেয়ে আসছিল। কিন্তু তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর সেই সহায়তা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর চাপ বেড়েছে। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৬০০ আফগানের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করে ডব্লিউএফপি। এই জরিপে দেখা যায়, ৯৩ শতাংশ আফগান পর্যাপ্ত খাবার পায় না। কারণ, দেশটির বেশির ভাগ মানুষের কাছে খাবার কেনার মতো অর্থ নেই।

ডব্লিউএফপির আঞ্চলিক উপ-পরিচালক অ্যানথিয়া ওয়েব বলেন, আফগানদের জীবন বাঁচাতে তাদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। দেশটিতে খাবারের মজুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। এই সংকট এড়াতে তাঁরা আক্ষরিক অর্থেই সহায়তা প্রার্থনা করছেন। তাঁরা ঋণ নিচ্ছেন। এদিকে যখন আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন অন্য দিকে তালিবান এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে। তালেবান এই মিথস্ক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক স্তরে বৈধতা এবং সাহায্য প্রাপ্তির কাজে ব্যবহার করলেও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলি এটিকে দায় বলে মনে করছে। পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থার জন্য প্রতিবন্ধকতা একই রকম ভাবে তালিবান শাসনকে স্বীকৃতি দেওয়া বা তার সশক্তিকরণের প্রক্রিয়াটি পশ্চিমা দেশগুলির মূল্যবোধ ভিত্তিক ব্যবস্থার জন্য একটি বড় রকমের ধাক্কা।

কারণ পশ্চিমা বিশ্ব বর্তমানে আফগানিস্তান থেকে বিশৃঙ্খল ভাবে সেনা প্রত্যাহার, চিনের আগ্রাসন এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার সাম্প্রতিক কার্যকলাপের ভারে জেরবার হয়ে আছে। পাশাপাশি আফগানিস্তানে পুনর্বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যে আগ্রহের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আফগানিস্তানের ব্যাপারে পুনরায় আগ্রহ দেখালে তা পশ্চিমা দেশগুলিকে নিজেদের সমাজ এবং নির্বাচক মণ্ডলীর সমালোচনার মুখে ফেলবে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলি তাই আফগানিস্তানের প্রেক্ষিতে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে না পড়ার পন্থা অবলম্বন করেছে, যা অ-তালিবান শক্তিগুলির সঙ্গে তাদের সীমিত মিথস্ক্রিয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে। অন্য দিকে মানবিক বিপর্যয়ের দিকটিতে নজর না দিলে তা আফগানিস্তানের পতন ডেকে আনবে। এবং এমনটা হলে তা পশ্চিমী দেশগুলির জন্য উদ্বাস্তু, চোরাপাচার এবং সন্ত্রাসবাদের মতো সমস্যাগুলিকে তীব্রতর করে তুলবে। এর পাশাপাশি যথেষ্ট পরিমাণে সম্পদ থাকা, উন্নয়নে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং আফগানিস্তানের পুনর্গঠনের কাজে আগে অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও হতভাগ্য আফগানদের সাহায্য করতে ব্যর্থ হলে বন্ধু দেশ এবং অংশীদারদের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলির দায়বদ্ধতা এবং মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। পশ্চিমা দেশগুলি তাই বর্তমান তালিবান প্রশাসনকে শক্তিশালী করতে না চাওয়া এবং একই সঙ্গে আফগানিস্তানের ভেঙে পড়া রুখতে চাওয়ার মাঝে দ্বিধাবিভক্ত এবং এই দু’টির কোনও একটি ঘটলেই তাদের ব্যর্থতা প্রমাণিত হবে। বর্তমানে পাশ্চাত্যের সামনে একমাত্র পথটি হল আরও বেশি করে মানবিক সহায়তা প্রদান করা এবং তালিবানকে সংস্কারের কাজে বাধ্য করা। দ্বিধান্বিত অবস্থান এবং রাজনৈতিক মূল্য দেওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট সব দেশকে এ ভাবেই আফগানিস্তানে এক স্থিতিশীল সমাধান অর্জন করা থেকে বিরত রেখেছে সংস্কারের বিষয়ে তালিবানরা উৎসাহ দেখায়নি এবং তারা মিথ্যা আশা ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে বৈধতা এবং সাহায্য চাওয়ার জন্য সঙ্কটকে কাজে লাগাচ্ছে।

অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ এবং পশ্চিমা শক্তিগুলি এক সংশোধিত তালিবানের আশায় রয়েছে যদিও কী ভাবে তারা নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে।সে বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। মানবিক সহায়তা প্রদানের ঊর্ধ্বে উঠে একটি স্থিতিশীল সমাধানের সম্ভাবনা তাই কঠিন হতে পারে যদি না আফগানিস্তানের নিরাপত্তার অঙ্কে পরিবর্তন আসে। কিন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এক অসংশোধিত তালিবানের অধীনস্থ আফগানিস্তানের জন্য অর্থনৈতিক সুরাহা খুঁজে বার করার কাজে দ্বিধাগ্রস্ত। অনেকেই বিশ্বাস করেন, যে কোনও রকমের অর্থ সাহায্যই তালিবানের সম্পদ বাড়াবে, তাদের আরও বৈধতা দেবে এবং আফগানিস্তানে তাদের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি বাড়বে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের প্রতিবন্ধকতাগুলির পরিমাণও। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তরফে তালিবানের কাছে নারী ও মানবাধিকার রক্ষা, সমানাধিকার সুনিশ্চিত করা ও সব আফগানকে সুরক্ষা দেওয়া, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন, নাগরিকদের রাজরোষ থেকে রেহাই দেওয়া, আন্তর্জাতিক অপরাধের পরিমাণ হ্রাস করা এবং আফগানিস্তানে যে কোনও ধরনের জঙ্গি গোষ্ঠীকে আশ্রয় না দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়েছে। যদিও এই সব দাবি পূরণে তালিবানকে উচ্চ রাজনৈতিক মূল্য চোকাতে হবে। সংগঠনটি এখনও মানবাধিকার, নারী শিক্ষা, জীবিকার সংস্থান এবং অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সংযোগ ও আদানপ্রদানের মতো বিষয়গুলিতে দ্বিধাবিভক্ত। অভ্যন্তরীণ বিভাজন বা আদর্শগত সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হোক, এমনটা তারা কখনও চাইবে না, বিশেষ করে আই এস কে পি যখন নতুন বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে। একই সঙ্গে, সংগঠনটির বিদ্রোহী সেনার সংখ্যা বৃদ্ধির কৌশল যে কোনও ধরনের সংস্কারের পথকে জটিল করে তুলবে এবং খরচের পরিমাণ বৃদ্ধি করবে। তবুও তালিবান আন্তর্জাতিক বৈধতা এবং সাহায্যের আশায় সংস্কারের শূন্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছে।

গত আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর দেশটিতে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং মানবিক সঙ্কট নিয়ে একের পর এক খবর প্রকাশ করে এলেও এর জন্য দায়ী মূল কারণটিকেই এড়িয়ে গিয়েছে করপোরেট গণমাধ্যমগুলো আগস্টে মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পর শত শত নারী ও কিশোরী’র অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিএনএন-এ প্রচার করা হয়েছিল একের পর এক খবর। চার মাস পর যখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এই নাগরিকরা ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটের সম্মুখীন তখন এই তোলপাড় দেখা যায়নি।জাতিসঙ্ঘ, মানবাধিকার সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞরা একের পর এক আফগানিস্তানের মানবিক সঙ্কট, খরা, সংঘর্ষ, কোভিড-১৯ এবং দুর্ভিক্ষ নিয়ে সতর্ক করে আসছেন এবং সহায়তার আবেদন জানাচ্ছেন। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলেছে, ‘আফগানিস্তান এখন বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। খাদ্যনিরাপত্তা পুরোই ভেঙে পড়েছে।’ ক্রমবর্ধমান সঙ্কটে এবিসি, সিবিএস, এনবিসি, সিএনএন, ফক্স নিউজ এবং এমএসএনবিসি’র ৩৭টি সংবাদ চিহ্নিত করে যেখানে মানবিক সঙ্কট এবং নারী অধিকার শব্দটি বারবার উঠে এলেও নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তুলে ধরা হয়নি। শুধু এমএসএনবিসি এবং সিবিএস-এর দু’টি সেগমেন্টে অতিথি হয়ে আসা আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটির একজন মুখপাত্র আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করেছিলেন।এই গণমাধ্যমগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রকে হিতৈষী অভিনেতা হিসেবে চিত্রিত করার প্রয়াসই প্রভাব বিস্তার করেছিল। আফগানিস্তানের সদ্য স্নাতক তরুণরা আশঙ্কা করছেন তালেবান শাসনে নারীর চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা এবং দেশের ক্রমবর্ধমান মানবিক সঙ্কট উভয়ের কারণেই তাদের চাকরি পাওয়া কঠিন হতে পারে। মোদ্দা কথা হলো একটি শক্তিশালী শত্রু যখন আপনার দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল হিমায়িত করে রাখে তখন চাকরি পাওয়া সহজ নয়।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য প্রত্যাহার শুরুর আগেই ৫০ শতাংশ আফগান চরম সঙ্কটে ছিলেন। কয়েক দশকের সঙ্ঘাত, আগ্রাসন এবং দখলদারিত্ব আফগানিস্তানকে একটি অনিশ্চিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে নিয়ে গেছে। বর্তমান মানবিক সঙ্কটের জন্য খরা, মহামারী দায়ী হলেও এর মূল কারণ বিপর্যস্ত অর্থনীতি। দেশটির পুরো ব্যাংকিং খাত ভেঙে পড়েছে।সরকারি কর্মীদের বেতন দেয়া যাচ্ছে না, নাগরিকরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারছেন না বা বিদেশী স্বজনদের কাছ থেকেও টাকা নিতে পারছেন না। দেশটির অর্ধেকের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন। ১০ লাখ শিশু এতটাই অপুষ্টিতে ভুগছে যে, তারা আগামী মাসে প্রাণ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। অনেক গণমাধ্যমই এই সঙ্কটের জন্য তালেবানকে দোষ দিয়ে বলছে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার বাইরে আফগানিস্তানের অন্য চাকরিতে নারীর ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটির অর্থনীতিতে অবদান রাখা জিডিপির পাঁচ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে বাস্তবিক বিষয় হলো-এর থেকে সঙ্কটের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী তালেবানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। গত ২০ বছরের মার্কিন দখলদারিত্ব আফগানিস্তানকে জিডিপির ৪০ শতাংশ এবং বাজেটের ৮০ শতাংশই ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভর করে রেখেছিল। আফগানিস্তান ছাড়ার পর যুক্তরাষ্ট্র তাদের ফেডারেল রিজার্ভের প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার জব্দ করে এবং মার্কিন ও জাতিসঙ্ঘের নিষেধাজ্ঞার কারণে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল আফগানিস্তানের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে সঙ্কুচিত হয়ে যায়।আফগানিস্তানে কাজ করা সাবেক মার্কিন সামরিক কমান্ডার, কয়েক ডজন কংগ্রেস সদস্যের অনুরোধ সত্ত্বেও বাইডেন প্রশাসন নীতি থেকে সরেনি। তারা বলছে এটি তালেবানের শাস্তি; কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞাগুলো দেশটির লাখ লাখ বেসামরিক মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।

২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে যে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হয়, তাতে প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়। এই হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র এই সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য দায়ী করেছিল জঙ্গি ইসলামী গোষ্ঠী আল কায়েদা এবং এর নেতা ওসামা বিন লাদেনকে।আফগানিস্তানের তালেবান সরকার যখন ওসামা বিন লাদেনকে হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালায়। তারা বেশ দ্রুতই আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে তালেবানকে অপসারণ করে। আফগানিস্তানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সেখান থেকে যেন আর কোন সন্ত্রাসবাদী হুমকি তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল নেটো জোটের মিত্র দেশগুলো। এই যুদ্ধের মাধ্যমে আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ বছর ধরে যুদ্ধ চলেছে, সেই তালেবানের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র আবার সন্ধি করেছে। আর সেই পটভূমিতেই আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আফগানিস্তান যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের জীবন গেছে, লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তিতে তালেবান অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা আফগানিস্তানকে আর এমন কোন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর ঘাঁটি হতে দেবে না,যারা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। কিন্ত পশ্চিমা দেশগুলি এবং তালিবান পরস্পরের স্বার্থ সম্পর্কে উদাসীনতা দেখানোর ফলে মানবিক সঙ্কটের ছায়া ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
[email protected]



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: