ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করা হোক

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২২ ০১:৪৯

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২২ ০১:৪৯

ফাইল ছবি

অর্থ সাশ্রয়, জনগণের কর্মসংস্থান এবং দেশীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতে ইভিএম পরিহার করে ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করা হোক। যদিও ইতিমধ্যে ইভিএম ক্রয়ের নামে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে জনশ্রুতি এবং বিতর্ক রয়েছে।

ইভিএম ত্রুটি থাকায়, উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ যন্ত্রের তৈরি এবং ব্যবহার থেকে সরে এসেছে।

* আবিষ্কারক দেশ আমেরিকায় নিষিদ্ধ।
* ইভিএম বর্জন করতে যাচ্ছে ভারত।
* আয়ারল্যান্ড ২০০৬ সালেই পরিত্যাগ করেছে।
* ২০০৯ সালে জার্মানিতে অসাংবিধানিক ঘোষণা।

বাংলাদেশের মতো একটি দেশ বিলাসিতা, অর্থ আত্মসাত এবং বিশেষ কিছু ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের জন্য জনমত উপেক্ষা করেই আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের চাইতে অন্তত দশ গুণ বেশি অর্থ ব্যয়ে বেশ কিছু ইভিএম মেশিন এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ক্রয় করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্তত ৩৩% মানুষ এখন পর্যন্ত বাটন মোবাইল ব্যবহার করতে পারে না, সেই ক্ষেত্রে তাদেরকে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া নিছকই মূর্খতা।

ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সংযোগ থাকা আবশ্যক। অথচ বাংলাদেশের অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে বিদ্যুতের সংযোগই নেই! বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় দিনে গড়ে ১৪ ঘন্টা বিদ্যুত থাকে না। ইভিএম ব্যবহারে বিশেষ প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, সংষ্কারে প্রয়োজন প্রচুর অর্থ।

ইভিএম এ ভোট দানে সহায়তা করার নামে ভোটারের ভোটাধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। ভোট দানে সহায়তা এবং ভোট কেন্দ্রের বিশেষ কক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসি ক্যামেরা ক্রয়, স্থাপন, রক্ষনাবেক্ষন করার জন্য আরো হাজার কোটি টাকা লুটপাট হবে! এতে করে ভোটারের গোপনীয়তা,স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকবে না।

ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করা হলে। রাষ্ট্রীয় পেপার মিল, প্রেস, ছাপাখানাসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট শিল্প, কলকারখানা গুলো সচল থাকবে। দেশের অর্থ, সম্পদ দেশে থাকবে। বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হবে। নির্বাচন পরবর্তী ব্যালট পেপারগুলো রিসাইকেল করে কার্টন তৈরি করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যাবে।

অতএব উন্নত বিশ্বে প্রত্যাখ্যাত ইভিএম নামক বিলাসিতা জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়ে, দেশের অর্থ লুট করবেন না। পেপার মিল, পরিবহন, প্রেস, ছাপাখানার সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকদের পেটে লাথি দেবেন না।

ইভিএম মেশিনে প্রতিবন্ধী, অঙ্গহীন, পঙ্গু মানুষের ভোটদানের সুযোগ নেই! আঙুলের ছাপ বা পিঙ্গার জটিলতার কারণে প্রায়ই একজন ব্যক্তির ভোট গ্রহণের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা ভোট গ্রহণ স্থগিত করে রাখা হচ্ছে! যান্ত্রিক ত্রুটি, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে রাখা হচ্ছে। এতেকরে সময় সাশ্রয়ের পরিবর্তে অতিরিক্ত সময় এবং চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভোটারদের!

ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ার তুলনায় দ্বিগুণ জনবল, সময় এবং হাজার গুন বেশী অর্থ সম্পদ ব্যয় করেও সুষ্ঠ, নিরাপদ ভোটাধিকার নিশ্চিতের পরিবর্তে জণদুর্ভোগ চরমে। এছাড়া একজনের আঙুলের ছাপ অন্য জন দিয়ে দিচ্ছে, যার বাস্তব প্রমাণ ডা.কামাল হোসেনের আঙুলের ছাপ না মেলাতে প্রিসাইডিং অফিসারের আঙুলের ছাপ দিয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে!

বিঃদ্রঃ- এ জাতি যতদিন পর্যন্ত হলুদ মিডিয়া বয়কট করতে কালক্ষেপন করবে, ততদিন পর্যন্ত এ জাতির লাঞ্ছনা, দুর্ভোগ, দুর্দশা বৃদ্ধি পাবে এবং মেনে নিতে হবে!

লেখক : মিনার আহমেদ (মানবাধিকারকর্মী)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: