ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

মানুষের প্রয়োজনে ইসলাম হালাল পশু জবাইয়ের অনুমোদন দিয়েছে: আহমাদুল্লাহ

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২৩ ১৫:১৫

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২৩ ১৫:১৫

ছবি: সংগৃহীত

ইসলামিক ডেস্ক : ইসলামী শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের নাম কোরবানি। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা কোরবানি দেওয়া নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে থাকেন। তাদের মতে পশু জবাই করা মহাপাপ।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিষয়টি ক্লিয়ার করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেন শায়েখ আমাদুল্লাহ।

তিনি পোস্টে লেখেন, কুরবানীর সময় এক ধরনের সিজনাল পশুপ্রেমীর আবির্ভাব ঘটে। সারা বছর তারা মাছ-গোশত খেয়ে কুরবানীর সময় বলে, ইসলাম অমানবিক ধর্ম। পশুহত্যা এদের ধর্মীয় রীতির অংশ।

ইসলাম কি আসলেই অমানবিক ধর্ম? আসুন একটু পর্যালোচনা করি। বিশ্বসভ্যতায় মানবজাতিকে টিকে থাকতে হলে পশুহত্যা করতেই হয়, এ কথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। খাদ্যচাহিদা মেটানোর জন্য একদিকে যেমন প্রাণি জবাইয়ের প্রয়োজন হয়, তেমনি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যও প্রয়োজন হয় প্রাণি হত্যার। 

যেমন, খাদ্যশস্য রক্ষার জন্য এ বছর ৫০ লক্ষ ক্যাঙ্গারু হত্যার আদেশ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া প্রশাসন। মানুষের প্রয়োজনে ইসলাম হালাল পশু জবাইয়ের অনুমোদন দিয়েছে, সাথে দিয়েছে একটি মানবিক নীতিমালাও। 

রাসুল সা. বলেছেন, যখন তোমরা জবাই করবে, উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। এবং প্রত্যেকে তার ছুরিতে শান দেবে, যেন প্রাণির বেশি কষ্ট না হয়। এই নীতিমালা কুরবানীর পশুর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। 

আল্লাহর নৈকট্য লাভের বড় মাধ্যম কুরবানী। পাশাপাশি এর প্রভূত ইহজাগতিক উপকারিতা রয়েছে। আমাদের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কুরবানী। এদেশে হাজার হাজার গরুর খামার গড়ে উঠেছে। সেখানে লক্ষ লক্ষ কর্মচারী কাজ করে। এছাড়া পশুপালনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারী অসংখ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সারা দেশে। ছোট-বড় এইসব ব্যবসায়ীদের লাভজনক ব্যবসা টিকে আছে কুরবানীর কেনাবেচার ওপর নির্ভর করে।

একটি দেশ কতটা উন্নত তা বোঝা যায় দেশটির নাগরিকদের দৈহিক পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সূচকের ওপর। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে এমন অসংখ্য পরিবার আছে, সারা বছর তারা একদিনের জন্যও গরু-ছাগলের গোশত খেতে পারে না। দারিদ্র্যপীড়িত এ দেশের মানুষের পুষ্টি ও আমিষের ঘাটতি মেটাতে অভাবনীয় ভূমিকা রেখে চলেছে কুরবানী। 

এছাড়া আমাদের চামড়াশিল্পের কাঁচামালের বড় যোগান আসে কুরবানীর পশু থেকে। যদিও এই শিল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।কুরবানী উপলক্ষ্যে গড়ে ওঠা বড় বড় পশুহাট, পরিবহন ব্যবস্থা, পশুখাদ্যের উৎপাদন ও বাজারজাত এবং এর সাথে জড়িত লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা—এর সবই সীমিত হয়ে যেত, যদি না থাকত কুরবানী। 

এতসব ইহজাগতিক কল্যাণের পরও যেসব বস্তুবাদী মানুষেরা কুরবানীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাদের মতলব যে ভিন্ন, তা বুঝতে আমাদের বাকি থাকে না।'



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: