ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

ইউক্রেনীয়দের সম্ভাব্য হত্যার তালিকা করেছে রাশিয়া

বিদেশ বার্তা | প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০১:৩২

বিদেশ বার্তা
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০১:৩২

ইউক্রেন যুদ্ধ

 

সম্ভব্য যুদ্ধে যেসব ইউক্রেনীয়দের ‘হত্যা করা হবে কিংবা ক্যাম্পে পাঠানো হবে’ তার তালিকা রাশিয়া ইতোমধ্যে করে ফেলেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘকে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি চিঠিও পাঠিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন যুদ্ধে যেসব ইউক্রেনীয়দের হত্যা করা হবে বা ক্যাম্পে পাঠানো হবে রাশিয়ান বাহিনী তার তালিকা তৈরি করেছে এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে।

ওই চিঠির খবর এমন সময় সামনে এলো যখন ইউক্রেন সীমান্তের রুশ সেনা উপস্থিতি নিয়ে আসন্ন যুদ্ধের শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। ইউক্রেনে সম্ভাব্য ‘মানবাধিকার বিপর্যয়’ সম্পর্কেও বারবার সতর্ক করে আসছে ওয়াশিংটন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটকে সম্বোধন করা চিঠিতে বলা হয়েছে, আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে যে রাশিয়ান বাহিনী সম্ভবত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে কিংবা বেসামরিক জনগণের শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ মোকাবেলা করতে প্রাণঘাতী ব্যবস্থা নেবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে চলমান সংকট নিরসনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ‘নীতিগতভাবে’ সম্মত হয়েছেন বলে স্থানীয় সময় গভীর রাতে হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বাইডেন-পুতিনের সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের বৈঠক শেষেই দুই দেশের শীর্ষ ব্যক্তিদ্বয় সাক্ষাৎ করবেন।

এলিসি প্রাসাদ সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রোববার ফোনে বাইডেন-পুতিন দুজনের সঙ্গেই কথা বলে ওই বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরোপের নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষ আলোচনায় বসবে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এই আলোচনায় সব পক্ষের মধ্যে সমন্বয় করবেন।
তবে এই আলোচনায় পক্ষ আসলে কারা সেটা বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়নি।

এর আগে রোববারই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছিলেন, চলমান সংকট নিরসনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেকোনো সময়, যেকোনো শর্তে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
ব্লিঙ্কেন রোববার মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনে একটি টকশোতে বলেছিলেন, যা দেখতে পাচ্ছি তাতে বিষয়টি ভীষণ গুরুতর বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমরা একটি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি। তবে ট্রাংক এবং বিমান না সরা পর্যন্ত আমরা কূটনৈতিক উপায়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতে প্রতিটি সুযোগ ও প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে চাই।
ব্লিঙ্কেন এর আগে সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন’কে বলেছিলেন, বাইডেন স্পষ্ট করে বলেছেন যে যুদ্ধ আটকাতে তিনি যেকোনো সময়, যেকোনো শর্তে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত।

সাবেক সোভিয়েতভুক্ত ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে আগ্রহের কথা জানায়। এর পর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, গত দুই মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে ১ লাখেরও বেশি সেনা মোতায়েন রেখেছে। ইউক্রেনে হামলা করতেই এই সৈন্য সমাবেশ বলেও তাদের অভিযোগ।
মস্কো অবশ্য বারবার বলছে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই; ন্যাটোর তৎপরতা থেকে নিজেদের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে তাদের এই প্রয়াস।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সদস্যরা মস্কোর এই বক্তব্যে আস্থা রাখতে পারছে না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: