ঢাকা | বুধবার, ৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

আবারো বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বিজিপির ১৭৯ সদস্য

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৪ ১১:৪২

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৪ ১১:৪২

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েক সপ্তাহ কিছুটা শান্ত থাকার পর আবারো বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত অস্থির হয়ে উঠেছে। সীমান্ত এলাকায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যে মিয়ানমারের অন্তত দুজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পালিয়ে যাওয়ার সময় নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ১৭৯ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ‘মিয়ানমার থেকে ছোড়া’ গুলিতে একজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আহত হয়েছেন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, সোমবার পুরোদিন নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৭৯ জন বিজিপি সদস্য পালিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে দুপুরে ২৯ জন এবং সন্ধ্যার পর আরো ১৫০ জন এসেছেন। তারা অস্ত্র জমা দেওয়ার পর বিজিবি তাদের হেফাজতে নিয়েছে।

এর আগে মিয়ানমারের এই সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিলেন দেশটির সেনাসদস্যসহ ৩৩০ জন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন এই ৩৩০ জন। তাদের মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, ২ জন সেনাসদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের জামছড়ি সীমান্তে ইউপি সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সোমবার বিকাল ৪টার দিকে জামছড়ি এলাকার মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাবের আহমদকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন গণমাধ্যমে বলেন, ‘সোমবার বিকালে সীমান্ত এলাকা জামছড়ি মসজিদের পাশে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করছিলেন ইউপি সদস্য সাবের আহমদ। এ সময় মিয়ানমার থেকে আসা একটি গুলি তার কোমরে লাগে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’

এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় প্রশাসনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা গুলিবিদ্ধ কেউ হাসপাতালে এসেছে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি।

কী হচ্ছে মিয়ানমারে?
বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা ছাড়াও মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থানে জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধবিগ্রহ বেশ প্রকট হয়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্ত আরাকানে এলাকায় আরাকান আর্মি (এএ), অন্যান্য এলাকায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন (ইএও) জান্তা শাসকের বিভিন্ন সামরিক ও প্রশাসনিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ বাড়িয়েছে বলে ইরাবতী জানিয়েছে।

গণমাধ্যমটি বলছে, মিয়ানমার জান্তা গত চার দিনে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলসহ আরও সৈন্য হারিয়েছে এবং কৌশলগত দুর্গসহ ঘাঁটিও হারিয়েছে। গণমাধ্যমটি বলছে, আরাকান আর্মি গত শুক্রবার ইয়ে তুত উইন নামে এই সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এর আগে আরাকান আর্মি কৌশলগত কমান্ডার কর্নেল মায়ো মিন কো কো, মেজর স তোয়ে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিও থু অংসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে।

আরাকানের বাইরে চীনের সীমান্তের কাছে গত সপ্তাহে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি জান্তার সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ২০টির বেশি ফাঁড়ি ও ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে এবং সেখানে এখনও যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে বলে ইরাবতীর খবর।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: