ঢাকা | বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

মধ্যরাত থেকে ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:১১

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:১১

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ১১ অক্টোবর মধ্যরাত (১২টার পর) থেকে ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এই নিষেধাজ্ঞা ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এ সময় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে এবং একই সঙ্গে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে।

ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইতোমধ্যে নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জামাদী তীরে উঠিয়েছে জেলেরা। ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকাকালে ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলেদের সরকার ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেবে।

প্রতি বছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে ইলিশের ডিম ছাড়ার আসল সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পদ্মা-মেঘনা নদীতে ছুটে আসে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবেন না। এই আইন অমান্যকারীকে মৎস্য আইনে সাজা প্রদান করা হবে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পরিবার-পরিজনের ভরন-পোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে জেলেরা। এরমধ্যে সরকারি সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও করে অনেক জেলে। প্রকৃত জেলেদের সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার দাবি জানান জেলেরা।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রামহীমপুর ইউনিয়নের জেলে বিল্লাল খান বলেন, প্রতিবছর সরকার দুইবার ইলিশ ধরতে নিষেধ করে। আমরা সব সময়ই নিষেধাজ্ঞা পালন করি। কিছু জেলে আছে, যারা প্রশাসনেন চোখ ফাঁকি দিয়ে মাছ ধরে। যারা ধরে নিরুপায় হয়ে ধরে। কারণ সরকার যে চাল দেয় তা দিয়ে কিছু হয় না। চালের সঙ্গে আরও জিনিস লাগে, তার খরচকে দিবে। আমাদের দাবি চালের সঙ্গে যেনো আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার জেলে মোহাম্মদ দিদার আলী বলেন, এই বছর নদীতে ইলিশ কম। সারাদিন জাল ফেলেও তেমন ইলিশ উঠে না। ধারদেনা কিস্তি করে আমাদের চলতে হয়। এর মধ্যে ২২ দিন মাছধরা নিষিদ্ধ। নৌকা-জাল উঠিয়ে ফেলবো। দেখি অন্যকাজ করে সংসার চালাতে হবে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, অভিযান চলাকালে চাঁদপুর মাছঘাটে ২২ দিন ইলিশ কেনা-বেচা বন্ধ থাকবে। একটা মাছও বিক্রি হবে না। আমরা সরকারের সকল নিয়ম কানুন মানি। সরকার জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয় কিন্তু মাছঘাটের শ্রমিকরা কোনো সহায়তা পায় না। আমি প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাবো যাতে মাছঘাটের শ্রমিকদের সহায়তা করা হয়।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ৪৩ হাজার ৭৭২ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এ বছর ৫ কেজি চাল বাড়িয়ে জেলেদের ২০ কেজির যায়গায় ২৫ কেজি চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে বিজিএফ এর চাল বরাদ্দ হয়েছে এবং অনেক যায়গায় বিতরণ শুরু হয়েছে। আশা করি জেলেরা মাছধরা থেকে বিরত থাকবে।

তিনি আরো বলেন, সরকারের এই আদেশ অমান্য করে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। এ বছর অভিযান সফল হলে আগামীতে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: