ঢাকা | মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ‘ফাঁস’

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৩ ০১:১০

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৩ ০১:১০

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সরকারের একটি ওয়েবসাইট থেকে দেশের অনেক নাগরিকের নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচিতি নম্বরসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মারকোপাওলোস এমন দাবি করেছেন।

মারকোপাওলোস বলেছেন, গত ২৭ জুন হঠাৎ করেই তিনি ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো দেখতে পান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (বিজিডি ই-গভ সার্ট) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মারকোপাওলোসের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের লাখ লাখ নাগরিকের তথ্য ফাঁস হয়েছে।

তথ্য ফাঁস হওয়ার এ খবরটির সত্যতা যাচাই করেছে তথ্যপ্রযুক্তির খবর দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ। তারা বলছে, সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের একটি ‘পাবলিক সার্চ টুলে’ প্রশ্ন করার অংশটি ব্যবহার করে এ পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে ফাঁস হওয়া ডেটাবেজের মধ্যে থাকা অন্য তথ্যগুলোও ওই ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে। যেমন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ব্যক্তির নাম, কারও কারও বাবা-মায়ের নাম পাওয়া গেছে। ১০টি ভিন্ন ধরনের ডেটা ব্যবহার করে এ পরীক্ষা চালায় টেকক্রাঞ্চ।

সরকারের কোন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে, তার নাম উল্লেখ করেনি টেকক্রাঞ্চ। কারণ, মারকোপাওলোস বলেছেন, তথ্যগুলো এখনো অনলাইনে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। তথ্য ফাঁসের কথা জানাতে এবং এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে টেকক্রাঞ্চের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কয়েকটি সরকারি সংস্থাকে ই–মেইল পাঠানো হয়েছিল। তবে কোনো সংস্থার কাছ থেকেই জবাব পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে বিজিডি ই-গভ সার্টের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান।

বাংলাদেশে ১৮ কিংবা তার বেশি বয়সী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়ে থাকে। পাশাপাশি শিশুদের জন্মনিবন্ধন করাতে হয়। গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাওয়া, পাসপোর্ট করা, জমি বেচাকেনা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলাসহ বিভিন্ন সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র দেখাতে হয়।

তথ্য ফাঁসের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের বিজিডি ই-গভ সার্ট, সরকারের প্রেস অফিস, ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশি কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল টেকক্রাঞ্চ। তবে সাড়া পাওয়া যায়নি।

মারকোপাওলোস বলেছেন, তথ্যগুলো খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। টেকক্রাঞ্চকে তিনি বলেন, গুগলে সার্চ করার সময় ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো আপনা-আপনিই হাজির হয়েছে। তথ্যগুলো খোঁজার কোনো চেষ্টা তিনি করেননি। গুগলে একটি এসকিউএল এরর সার্চ করার সময় দ্বিতীয় ফলাফল হিসেবে এগুলো হাজির হয়। এসকিউএল হলো ডেটাবেজে ডেটা ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে তৈরি একটি প্রোগ্রামিং ভাষা।

ব্যক্তির ই–মেইল ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং জাতীয় পরিচিতি নম্বর ফাঁস হওয়াটা এমনিতেই ঝুঁকির। আর মারকোপাওলোস মনে করেন, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে ঢোকা, অ্যাপ্লিকেশনগুলো মডিফাই বা ডিলিট করাসহ জন্মনিবন্ধনের রেকর্ড যাচাই করতে ফাঁস হওয়া এ তথ্যগুলো ব্যবহারের ঝুঁকি থাকে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: