ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

দেশে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত সাড়ে ৪ কোটি মানুষ

আল আমিন | প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২৩ ১৪:০১

আল আমিন
প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২৩ ১৪:০১

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:  দেশে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি লোক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। দিনে দিনে এই সংখ্যা বাড়ছে।

সমীক্ষা বলছে, আক্রান্ত একজন রোগীর হাসপাতালে একবার চিকিত্সা নিতে গড়ে খরচ হয় ১৬ হাজার ৮১০ টাকা। সেই হিসাবে আক্রান্ত সাড়ে ৪ কোটি রোগীর প্রত্যেকে একবার হাসপাতালে চিকিত্সা নিলে মোট খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৫ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা, যা দেশের জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দের দ্বিগুণ।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জীবনাচরণ পরিবর্তনের পাশাপাশি ৭ থেকে ১০ শতাংশ শরীরের ওজন হ্রাস করাই ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের মূলমন্ত্র।

ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘হেপাটোলজি সোসাইটি’ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা এই পরামর্শ দিয়েছেন।

ফ্যাটি লিভারের কারণে দেশে যে অর্থনৈতিক বোঝা তৈরি হচ্ছে, গোলটেবিল বৈঠকে সেটির একটি হিসাব তুলে ধরেন হেপাটোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম। অধ্যাপক শাহিনুল আলম জানান, ফ্যাটি লিভারজনিত সিরোসিস ও লিভার ক্যানসারের রোগী ক্রমাগত বাড়ছে। এসংক্রান্ত জটিলতার ক্ষেত্রে শারীরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ আরো অনেক বেশি।

বিএসএমএমইউর হেপাটোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. সাইফুল ইসলাম এলিন বাংলাদেশে ফ্যাটি লিভারের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে বলেন, দেশে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ বিষয়ে আলোকপাত করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, জীবনাচরণ পরিবর্তনের পাশাপাশি ৭-১০ শতাংশ ওজন হ্রাস হচ্ছে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের মূলমন্ত্র।

বাংলাদেশের এই বিপুল অর্থনৈতিক বোঝা থেকে পরিত্রাণে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ এবং দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ওপর জোর দিয়ে হেপাটোলজি সোসাইটি গোলটেবিল বৈঠকে ১০টি সুপারিশ তুলে ধরে।

এগুলোর মধ্যে রয়েছে—প্রত্যেক ব্যক্তির সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে হাটতে হবে; সম্ভব হলে দড়ি লাফ, সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটার মাধ্যমে শরীরচর্চা প্রয়োজন; হাঁটা ও শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত সবুজ জায়গার ব্যবস্থা করা আবশ্যক; ‘স্বাস্থ্যকর নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যকর নগর’ স্লোগানের আওতায় শহরগুলোকে সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের উপযোগী করে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে; প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজাপোড়া কমাতে হবে এবং দুধ, ফল ও শাক-সবজি খাওয়া বাড়াতে হবে; গণসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাংক ফুড পরিহার এবং বাসায় বানানো স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে; প্রক্রিয়াজাত খাবারের ক্ষেত্রে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে পুষ্টিমান বজায় রাখার জন্য আদর্শমান সরবরাহ এবং আইন করে তা নিশ্চিত করতে হবে; দেশের প্রতিটি স্কুলে ‘স্কুল হেল্থ প্রোগামের’ আওতায় খেলার মাঠ বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং ক্লাসের শুরুতে শরীরচর্চার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; স্কুলভিত্তিক স্বাস্থ্যকর খাবার টিফিন হিসেবে প্রদান নিয়মে পরিণত করতে হবে; দেশি প্রতিটি বড় রাস্তার পাশে বাইসাইকেল চালানোর লেন করতে হবে এবং সবাইকে মোটরযানের পরিবর্তে বাইসাইকেল চালাতে উত্সাহিত করতে হবে।

বিদেশ বার্তা/ এএএ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: