
নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠ্য বইয়ে ভুল নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে। যার প্রায় কথাই মিথ্যা। তবে বইয়ে কিছুটা ভুল আছে। সেটা সংশোধনে কাজ করছি।
সোমবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা যখনই ভুলগুলো সম্পর্কে অবগত হচ্ছি, তখনই সেটা সংশোধনে কাজ করছি। তবে যা বইয়ে নেই, সেটা নিয়েও বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কিংবা সম্প্রতিকতাকে উস্কে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাই গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক।
এই সরকারের আমলে পঠনপাঠন পদ্ধতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা এই যুগে অচল। যুগের সাথে চলতে হলে তাকে দক্ষ হয়েও গড়ে উঠতে হবে। আমরা এমন একটি শিক্ষাপদ্ধিত নিয়ে কাজ করছি, যেখানে একজন শিক্ষার্থী হবে সৃজনশীল, যোগাযোগে দক্ষ, প্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ, সহমর্মিতাশীল, মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী, সহিষ্ণু ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তায় বিশ্বাসী। তাছাড়া এই যুগে তারা অচল প্রমাণিত হবে। আমরা সোনার বাংলা গড়তে চাই। কিন্তু এই জনশক্তি দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা যা পড়ছে, সেটা তারা জেনে পড়ুক। সেই অনুযায়ী তারা কাজ করুক এবং হাতে-কলমে দক্ষ হয়ে উঠুক। এই শিক্ষা কর্মসূচি নিয়ে আমরা কাজ করছি। কেননা সোনার মানুষ মানে অচল মানুষ নয়। সোনার মানুষ হবে মানবিক মানুষ।
সমালোচকদের জবাবে তিনি বলেন, আমরা উন্নত শিক্ষা কার্যক্রমে প্রায় ষোলআনা এগিয়ে গেছি। কিন্তু সমালোচকেরা সেটা বাদ দিয়ে ছোট ছোট ভুলগুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তি ছড়ায়। আমাদের পঠনপাঠন ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, সেটা নিয়ে তাদের কোন কথা নেই। তাই জাতিকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান থাকবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা মান ও সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন দিক জানতে পারবে। তবে সেই দিক দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে। কেননা তারা সেটা সবার আগেই করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভোগান্তি কমানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভর্তি ক্ষেত্রে অযথা ভোগান্তি দূর করতে গুচ্ছ পদ্ধতির কথা চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এটাতে যুক্ত হয়নি। নতুন পদ্ধতি চালু হলে শুরুতে কিছু ত্রুটি থাকে। তবে ধাপে ধাপে সেটা সমাধানযোগ্য। শুধু এটাই নয়। আমরা একমুখী শিক্ষাপদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করছি। যেটা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে হত্যার পর সেটা বহুমুখী রূপ নেয়। ফলে সবক্ষেত্রে আমরা সেটার ভালো সুফল পাচ্ছি না।
ভর্তি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিশ্বে প্রায় দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ভাষা জ্ঞান, ভনিতার জ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান যাচাই করেই মূল্যায়ন করা হয়। ফলে একটি মাত্র পরীক্ষা দিয়ে সকল শিক্ষার্থীই তাদের যোগ্যতা অনুসারে ভর্তির সুযোগ পায়। তাই গুচ্ছ পদ্ধতি চালু হয়েছে। এখান থেকে ধাপে ধাপে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে যেতে হবে। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কেও গুচ্ছ পদ্ধতির আওতায় আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বিদেশ বার্তা/ এএএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: