
মৌলভীবাজার থেকে : হঠাৎ করে মৌলভীবাজার জেলায় দেখা দিয়েছে কনজাংটিভার চোখ উঠার রোগ। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন চোখ উঠা রোগীদের দেখতে পাওয়া যায় চিকিৎসা নিতে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলাসহ ৭টি উপজেলা, এ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার, আায়ারল্যান্ড প্রবাসী মোঃ জুয়েল মিয়া, স্ত্রী সানজিদা আক্তার (মুসলিমা), তাদের ছেলে মোঃ সাজিব মিয়া ও মেয়ে মোছাম্মৎ আয়েশা আক্তার, এদের একই পরিবারের চারজনের এই রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েকদিন ধরে। মোঃ জুয়েল মিয়া বলেন, আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলেছি, ডাক্তার বলেছেন এটি এক ধরণের ভাইরাস জনিত রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার বলা হলেও সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াছে, ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে আর বর্ষায় ও রিতু পরিবর্তনে অনেক সময় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে। চোখের একেবারে বাইরের স্বচ্ছ অংশটির ডাক্তারি নাম ‘কনজাংকটিভা’। ভাইরাসের সংক্রমণে সেখানে তৈরি হয় প্রদাহ, ফুলে যায় চোখের ছোট ছোট রক্তনালি। ফুলে থাকা রক্তনালি গুলোর কারণেই চোখের রং লালচে হয়ে যায়, যেটাকে চোখ ওঠা বা ‘কনজাংকটিভাইটিস’ বলা হয়।
এ দিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলা নগরী থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেশির ভাগ ঘরেই এখন চোখ ওঠা রোগী দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। রোগী বাড়ায় দেখা দিয়েছে চোখের ড্রপের সংকট। আক্রান্তদের উল্লেখযোগ্য অংশই শিশু। সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যেই এই রোগ সেরে যায়। তবে জটিল রূপ ধারণ করলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার উপরে নির্ভর।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী জানান, চোখ ওঠা একটি মওসুমী ভাইরাস জনিত রোগ। তবে ড্রপার ব্যবহারের আগে এর মান ও মেয়াদ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। সরকারী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে যোগাযোগ করতে হবে। সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজার জেলাও চোখ ওঠার রোগী বেড়ে যাওয়ায় জেলার সকল সরকারী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত ড্রপার সরবরাহ করা হয়েছে আরো হবে।
তিনি আরো বলেন, দেখছি সারা দেশেই রোগটি আক্রান্ত সংখ্যা ছড়িয়ে পরেছে। এই রোগটিতে একজন আক্রান্ত হলে বাড়ির ও আশেপাশের সবাই আক্রন্ত হয়ে যায়। এই রোগটিতে একটু সতর্ক থাকলে ও চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষুধ সেবন করলে সহজেই সেরে যায়। ভাইরাসজনিত রোগ যেহেতু নিজেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যারা রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে তারা যেন কালো চশমা ব্যবহার করে ও সুস্থ মানুষ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলে, তাহলে এই রোগটি কমতে থাকবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: