05/01/2025 চীন-তাইওয়ান যুদ্ধের শঙ্কা: কার সক্ষমতা কেমন?
মো: মনিরুল ইসলাম
৪ আগস্ট ২০২২ ২০:৫২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যে কোনো সময় অঞ্চলটিতে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে শি জিনপিং সরকার। গত দুইদিন ধরে মহড়া-প্রশিক্ষণ চালিয়ে প্রস্তুত চীনের সেনাবাহিনী। সীমান্তে প্রস্তুত রয়েছে যুদ্ধবিমানও।
অন্যদিকে নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে তাইপে। এ অবস্থায় তাইওয়ানে চীন অভিযান শুরু করলে ইউক্রেন রাশিয়ার মতো আরেকটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শঙ্কা করছেন অনেকে। চীন ও তাইওয়ানের সামরিক সক্ষমতা ও তুলনা নিয়েও ব্যাপক আলোচনা চলছে।
সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া পৃথিবীর যে কোনো দেশের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করে চীন। এ বছরেই চীনের প্রতিরক্ষা খাতের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে ২৩০ বিলিয়ন ডলার। যেখানে তাইওয়ানের চলতি বছরের সামরিক খাতে বাজেট হলো ১৭ বিলিয়ন ডলার।
চীনের মোট দেশজ উৎপাদনের ১.৭ শতাংশ খরচ হয় সামরিক খাতে। তাইওয়ানের ক্ষেত্রে এটি ২.৩ শতাংশ। ক্রয়ক্ষমতার দিক দিয়ে তাইওয়ানের চেয়ে অনেক এগিয়ে চীন। ক্রয়ক্ষমতায় বিশ্বে চীনের অবস্থান সবার ওপরে। তাইওয়ান আছে ২১তম স্থানে। চীন ভূখণ্ডের পরিমাণ যেখানে ৯৫,৯৬,৯৬১ বর্গকিলোমিটার সেখানে তাইওয়ানের ভূখণ্ড ৩৫,৯৮০ বর্গকিলোমিটার।
চীনের সক্রিয় সেনার সংখ্যা ২০,৩৫,০০০ অন্যদিকে তাইওয়ানের সক্রিয় সেনা রয়েছে ১,৬৯,০০০। বেইজিংয়ের গ্রাউন্ড ফোর্সেস বা স্থলসেনা আছে ৯,৬৫,০০০ আর তাইপের ৯৪,০০০। চীনের নৌসেনার সংখ্যা ২,৬০,০০০ অন্যদিকে তাইওয়ানের নৌসেনার সংখ্যা ৪০,০০০। চীনের বিমানবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৩,৯৫,০০০ আর তাইওয়ানের মাত্র ৩৫,০০০।
চীনের রিজার্ভ সেনা সংখ্যা ৫,১০,০০০ তাইওয়ানের ১৬,৫৭,০০০। ট্যাংক শক্তিমত্তার দিক দিয়ে বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী রাষ্ট্র চীন। তাইওয়ানের অবস্থান ২০-এ। চীনের মোট ট্যাংক রয়েছে ৫,৪০০টি অন্যদিকে তাইওয়ানের ট্যাংকের সংখ্যা ৬৫০টি। চীনের কাছে ৩,২২৭টির বেশি বিমান রয়েছে। এর মধ্যে আছে যুদ্ধবিমান, পরিবহন উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টারসহ আরো কয়েক ধরনের উড়োজাহাজ। অপরদিকে তাইওয়ানের বিমান আছে কমবেশি ৫০০টি। চীনের সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ যেখানে ৫৯টি তাইওয়ানের সেখানে মাত্র ৪টি।
নৌ সক্ষমতায়ও এগিয়ে চীন। দেশটির মোট যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৭৭৭। তাইওয়ানের যুদ্ধজাহাজ আছে ১১৭টি। চীনের রয়েছে ২২টি বন্দর ও টার্মিনাল। তাইওয়ানের আছে ৬টি। বিমান হামলা প্রতিরোধ ও দূরপাল্লার আক্রমণ চালানোর জন্য উভয় দেশেরই আছে বেশ কয়েক ধরনের কামান বা আর্টিলারি। তবে এ ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে এগিয়ে আছে চীন। চীনা সামরিক বাহিনীতে ৯,৮৩৪টির বেশি আর্টিলারি রয়েছে তাইওয়ানের আছে ২,০৯৩টি।
চীন ও তাইওয়ানের সাঁজোয়া যানের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৫,০০০ ও ৩,৪৭২। চীনের ২টি বিমানবাহী রণতরি থাকলেও তাইওয়ানের এ ধরনের কোনো সামরিক সক্ষমতা নেই। অন্যান্য জাহাজের মধ্যে আছে হেলো ক্যারিয়ার, ডুবোজাহাজ, ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগেট, করভেট ও পেট্রল ভেসেল। সামরিক সংঘর্ষে লজিসটিক সুবিধা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ দিক দিয়েও তাইওয়ানের চেয়ে চীন অনেকাংশ এগিয়ে। চীনের আছে ৫০৭টি বিমানবন্দর। বিপরীতে তাইওয়ানের বিমানবন্দরের সংখ্যা ৩৭টি।
পারমাণবিক অস্ত্র
আর্মড ফোর্সেস ডট ইউ এর তথ্য অনুযায়ী, চীনের প্রায় ২৮০টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড আছে। তবে বিভিন্ন সূত্র মতে, চীনের ৩৫০ বা ৪০০টির মতো পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ বার পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। অপরদিকে তাইওয়ানের হাতে এ মুহূর্তে কোনো ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র নেই। তবে দেশটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় গোপনে পারমাণবিক গবেষণা ও কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ রয়েছে।